বিজেপিকে আটকানোর জন‍্য লকডাউন করছে রাজ‍্য সরকার : দিলীপ ঘোষ

10th September 2020 7:49 am বর্ধমান
বিজেপিকে আটকানোর জন‍্য লকডাউন করছে রাজ‍্য সরকার : দিলীপ ঘোষ


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : করোনা আটকানোর জন্য রাজ্য সরকার লকডাউন করছে না।রাজ্য সরকার লকডাউন করছে বিজেপিকে আটকানোর জন্য । পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামে দলের সাংগাঠনিক বৈঠকে যোগ দিয়ে এমনটাই দাবি করলেন রাজ্য বিজেপি  সভাপতি দিলীপ ঘোষ ।তাঁর বক্তব্য সরকার কারুর সঙ্গে কোন আলোচনা না করে শুধুমাত্র রাজনৈতিক স্বার্থে এইভাবে লকডাউন করছে।আর রাজ্য সরকার যেভাবে লকডাউন করছে তাতে কোন লাভ হচ্ছে না । উল্টে সাধারণ মানুষজনের কষ্ট বাড়ছে । দিলীপ ঘোষের এই বক্তব্যেকে যদিও  পাগলের প্রলাপ বলে পাল্টা কটাক্ষ করেছে শাসক দলের নেতৃত্ব । কেতুগ্রামে  সাংগাঠনিক বৈঠকে রাজ্য বিজেপি  সভাপতি  দিলীপ ঘোষ ছাড়াও পুর্ব বর্ধমান জেলা(গ্রামীন) সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষ উপস্থিত 
ছিলেন ।সেই বৈঠকেই তৃণমুল ও সিপিএম ছেড়ে প্রায় ৬০০ পরিবার বিজেপিতে যোগ দিয়েছে  বলে দলীয় তরফে দাবি করা করা হয়  । দলত্যাগীদের হাতে বিজেপির দলীয় পতাকা তুলে দিয়ে তাদের দলে স্বাগত জানান রাজ্য বিজেপি সভাপতি । সাংগাঠনিক বৈঠক সেরে দিলীপ ঘোষ  সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন । সংবাদ মাধ্যমকে তিনি বলেন , এই রাজ্যে দুর্নীতি, লুটপাট ও সাধারণ মানুষের উপর সন্ত্রাস চলছে ।সারা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে বিজেপি কর্মীরা খুন হচ্ছে । প্রতিদিনই খুনের ঘটনা ঘটছে । বিজেপিকে আটকানোর জন্য এখন এই নীতি নিয়েছে শাসক দল ।তবে এতকিছু করেও ওরা  বিজেপিকে আটকাতে পারছে না । বিজেপিকে আটকানোর সব রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। শাসক দলে নেতারা তাই পুলিশ দিয়ে ,গুণ্ডা দিয়ে 
,মিথ্যে  কেস দিয়ে , খুন করে , বাড়ি ছাড়া করে দিয়ে বিজেপির  লোকজনকে আটকাতে চাইছে । অথচ শাসক দলের পার্টি অফিসে বস্তা বস্তা বোমা পাওয়া যাচ্ছে । ওদের নেতাদের বাড়ির বাথরুমে ঝুড়িতে বোমা পাওয়া যাচ্ছে। বোমা বিস্ফোরণে ওদের  পার্টি অফিস পর্যন্ত উড়ে যাচ্ছে । কিন্তু ওদের বেলায় পুলিশ অন্য নীতি নিচ্ছে । দিলীপ ঘোষ এদিন বলেন , ‘এত অত্যাচার সত্ত্বেও গত লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় বিজেপি ১৮ টি আসনে জিতেছে । ২ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষ বিজেপিকে ভোট দিয়েছে ।  আগামী দিনে এই অত্যাচারের মোকাবিলা করেই বিজেপি বাংলায় পরিবর্তন আনবে’।  

দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্য প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্যের মুখপাত্র দেবু টুডু বলেন , দিলীপ ঘোষ  পাগলের প্রলাপ বকছেন। স্বাস্থ্যবিধি না মেনে  করোনা আবহে রাজনীতি করার জন্যই বিজেপি নেতা রাজ্য সরকারের লকডাউন নিয়ে  সমালোচনা করছে । অথচ ওদের নেতা তথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলছেন , ‘দো গজ কি দুরি - মুখমে মাস্ক জরুরি। ’ দেবু টুডু আরও বলেন, বিজেপি বাংলাকে অশান্ত করতে চাইছে ।  তবে লাভ কিছু হবে না । বিজেপির বাংলা জয়ের স্বপ্ন অধরাই থেকে যাবে । অন্যদিকে বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলও দিলীপ ঘোষের মন্তব্যের কড়া সামালোচনা করেছেন । এদিনই পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটে দলের বুথ ভিত্তিক কর্মী সম্মেলনে যোগ দেন অনুব্রত । বৈঠক স্থলে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অনুব্রত মণ্ডল ভেড়ার  দলের সঙ্গে বিজেপির তুলনা করেন । একই সঙ্গে তিনি বলেন - মিটিং ,মিছিল,সভা করার মতো লোকজন বিজেপির নেই । তাই  মান রাখতে দিলীপ ঘোষ  লকডাউনের দোহাই দিয়ে  বড়বড় কথা বলছে । পাল্টা প্রশ্ন তুলে অনুব্রত বলেন , কি কারণে বাংলার মানুষ বিজেপি করবে !ওরা কি দিতে পেরেছে ? বাংলার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা  বন্দ্যোপাধ্যায় যে উন্নয়ন করেছেন তা মানুষ এত তাড়াতাড়ি ভুলে যাবে নাকি ! অনুব্রত  দাবি করেন বাংলার মানুষ এত অকৃতজ্ঞ নন । ২০২১  বাংলার মানুষ ওদের যোগ্য জবাব দেবে । 

 

 





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।