প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : করোনা আটকানোর জন্য রাজ্য সরকার লকডাউন করছে না।রাজ্য সরকার লকডাউন করছে বিজেপিকে আটকানোর জন্য । পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামে দলের সাংগাঠনিক বৈঠকে যোগ দিয়ে এমনটাই দাবি করলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ ।তাঁর বক্তব্য সরকার কারুর সঙ্গে কোন আলোচনা না করে শুধুমাত্র রাজনৈতিক স্বার্থে এইভাবে লকডাউন করছে।আর রাজ্য সরকার যেভাবে লকডাউন করছে তাতে কোন লাভ হচ্ছে না । উল্টে সাধারণ মানুষজনের কষ্ট বাড়ছে । দিলীপ ঘোষের এই বক্তব্যেকে যদিও পাগলের প্রলাপ বলে পাল্টা কটাক্ষ করেছে শাসক দলের নেতৃত্ব । কেতুগ্রামে সাংগাঠনিক বৈঠকে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ ছাড়াও পুর্ব বর্ধমান জেলা(গ্রামীন) সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষ উপস্থিত
ছিলেন ।সেই বৈঠকেই তৃণমুল ও সিপিএম ছেড়ে প্রায় ৬০০ পরিবার বিজেপিতে যোগ দিয়েছে বলে দলীয় তরফে দাবি করা করা হয় । দলত্যাগীদের হাতে বিজেপির দলীয় পতাকা তুলে দিয়ে তাদের দলে স্বাগত জানান রাজ্য বিজেপি সভাপতি । সাংগাঠনিক বৈঠক সেরে দিলীপ ঘোষ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন । সংবাদ মাধ্যমকে তিনি বলেন , এই রাজ্যে দুর্নীতি, লুটপাট ও সাধারণ মানুষের উপর সন্ত্রাস চলছে ।সারা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে বিজেপি কর্মীরা খুন হচ্ছে । প্রতিদিনই খুনের ঘটনা ঘটছে । বিজেপিকে আটকানোর জন্য এখন এই নীতি নিয়েছে শাসক দল ।তবে এতকিছু করেও ওরা বিজেপিকে আটকাতে পারছে না । বিজেপিকে আটকানোর সব রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। শাসক দলে নেতারা তাই পুলিশ দিয়ে ,গুণ্ডা দিয়ে
,মিথ্যে কেস দিয়ে , খুন করে , বাড়ি ছাড়া করে দিয়ে বিজেপির লোকজনকে আটকাতে চাইছে । অথচ শাসক দলের পার্টি অফিসে বস্তা বস্তা বোমা পাওয়া যাচ্ছে । ওদের নেতাদের বাড়ির বাথরুমে ঝুড়িতে বোমা পাওয়া যাচ্ছে। বোমা বিস্ফোরণে ওদের পার্টি অফিস পর্যন্ত উড়ে যাচ্ছে । কিন্তু ওদের বেলায় পুলিশ অন্য নীতি নিচ্ছে । দিলীপ ঘোষ এদিন বলেন , ‘এত অত্যাচার সত্ত্বেও গত লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় বিজেপি ১৮ টি আসনে জিতেছে । ২ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষ বিজেপিকে ভোট দিয়েছে । আগামী দিনে এই অত্যাচারের মোকাবিলা করেই বিজেপি বাংলায় পরিবর্তন আনবে’।
দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্য প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্যের মুখপাত্র দেবু টুডু বলেন , দিলীপ ঘোষ পাগলের প্রলাপ বকছেন। স্বাস্থ্যবিধি না মেনে করোনা আবহে রাজনীতি করার জন্যই বিজেপি নেতা রাজ্য সরকারের লকডাউন নিয়ে সমালোচনা করছে । অথচ ওদের নেতা তথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলছেন , ‘দো গজ কি দুরি - মুখমে মাস্ক জরুরি। ’ দেবু টুডু আরও বলেন, বিজেপি বাংলাকে অশান্ত করতে চাইছে । তবে লাভ কিছু হবে না । বিজেপির বাংলা জয়ের স্বপ্ন অধরাই থেকে যাবে । অন্যদিকে বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলও দিলীপ ঘোষের মন্তব্যের কড়া সামালোচনা করেছেন । এদিনই পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটে দলের বুথ ভিত্তিক কর্মী সম্মেলনে যোগ দেন অনুব্রত । বৈঠক স্থলে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অনুব্রত মণ্ডল ভেড়ার দলের সঙ্গে বিজেপির তুলনা করেন । একই সঙ্গে তিনি বলেন - মিটিং ,মিছিল,সভা করার মতো লোকজন বিজেপির নেই । তাই মান রাখতে দিলীপ ঘোষ লকডাউনের দোহাই দিয়ে বড়বড় কথা বলছে । পাল্টা প্রশ্ন তুলে অনুব্রত বলেন , কি কারণে বাংলার মানুষ বিজেপি করবে !ওরা কি দিতে পেরেছে ? বাংলার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে উন্নয়ন করেছেন তা মানুষ এত তাড়াতাড়ি ভুলে যাবে নাকি ! অনুব্রত দাবি করেন বাংলার মানুষ এত অকৃতজ্ঞ নন । ২০২১ বাংলার মানুষ ওদের যোগ্য জবাব দেবে ।